শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন

আপডেট
পাট জাগ নিয়ে বিপাকে জয়পুরহাটের কৃষকরা, শুকিয়ে যাচ্ছে জমিতেই

পাট জাগ নিয়ে বিপাকে জয়পুরহাটের কৃষকরা, শুকিয়ে যাচ্ছে জমিতেই

পাট জাগ নিয়ে বিপাকে জয়পুরহাটের কৃষকরা

শাহাদুল ইসলাম সাজু, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর-ডোবায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। অত্যাধিক খরার কারণে জমিতে থাকা সোনালী আঁশ পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় দিন গুণছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, জয়পুরহাট জেলায় পাঁচ উপজেলা মিলে চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৪ শত ৯৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষা জাতের পাট ৩ হাজার ৯৩ হেক্টর ও দেশী জাত রয়েছে ২৫ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৫শ ৬০ মেট্রিক টন।

কিন্তু পাট কাটার সময় অতিক্রান্ত হলেও নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর-ডোবায় পর্যাপ্ত পরিমান পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন জেলার কৃষকরা। পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানির অভাবে পাট কাটতে না পারা, আবার অত্যধিক খরার কারণে জমিতে থাকা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কিছু এলাকায় গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে ডোবাতে পানি সেচ দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও তা প্রয়োজনে তুলনায় অপ্রতুল। বড় ও মাঝারি ধরনের পুকুরগুলোতে পানি থাকলেও মাছ চাষের কারণে সেখানে পাট জাগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ এলাকার কৃষকরা পানিতে পাট জাগ দিতে অভ্যস্ত হওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকে তেমন পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হক। পাট বীজ বপনের সময়ও এবার জমিতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট বীজ বপনেও বিলম্ব হয়। সে কারণে জয়পুরহাট জেলায় এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ জানায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করাসহ পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানী হিসেবে পাট কাঠি ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পাট চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগ হাতে-কলমে চাষীদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখাসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করে। ২০২১-২০২২ খরিপ-১ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯ শত ৮৫ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১৩ হেক্টর বেশি । এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার বেল পাট। গত বছর প্রতিমন পাট বিক্রি হয় প্রকারভেদে ২ হাজার ৫শ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার ২শ টাকা পর্যন্ত। বাজারে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে পাটের চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সে কারনে দিন দিন জেলায় পাটের চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন জানান, এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট চাষও বিলম্ব হয়েছে ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি আবার পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়েও বিপাকে পড়েছেন পাট চাষীরা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |